বরাবরই আমি দূরন্ত খুব, ভীষণ বাঁধনহারা আমার ভয়ে কাতর যেন, সেই বনগ্রামপাড়া বাড়ির কারো শাসন বারণ, মানতাম না তো মোটে বুকের ভেতর লাগামবিহীন বলগা হরিণ ছোটে কিশোর মনের ভাবনাগুলো আবেগপ্রবণ এতো হাজার রঙের স্বপ্ন বুনে প্রহর কেটে যেতো হঠাৎ বুকের বাম দিকটাতে কিসের যেন মায়া একটা পুতুল, মায়ার পুতুল ফেললো সেখানে ছায়া প্রতিমার মত চাঁদমুখ তাঁর, দু'চোখে লাজুক সকাল নুপুর পায়ে ভীরু চলন, হাসিতে সূর্য আড়াল অস্থিরতার সবকটা ক্ষণ দিলাম সঁপে তাঁকে আমার ভেতর অন্য আমি, নিজেকে লুকিয়ে রাখে প্রেম প্রেম সুখে বিভোর নয়ন স্বপ্নে সে মুখ ভাসে এতো কাছে পেয়ে পাই না তারে, যুদ্ধ জয়ের মাসে আমি আর সে পাশাপাশি থাকি, পাশাপাশি ঘরবাড়ি জানালায় বসে প্রতি সন্ধ্যাতে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি চোখে চোখে হয় কথা বিনিময়, সাবিত্রী রায় নামে গড়েছি বুকে তাজমহল এক, অবুঝ প্রেমের দামে ক্লাস সেভেনের বইয়ে চোখ রেখে, তাঁর খোলা জানালাতে পড়বার ছলে সে আমার সাথে কথা বলে দিন-রাতে ভোররাঙা সেই সময়ের কাছে স্বর্গও নয় কিছু এমন সময় সারা পাড়া যেন নিল দু'জনার পিছু সাবিত্রী আর আমার প্রেমের কানকথা যায় রটে এরই মাঝে ভাসে অন্য ছবি মাতৃভূমির পটে সবকিছু হয়ে গেলো এলোমেলো, উত্তাল একাত্তরে মাকে বাঁচাবার শপথ নিয়ে, ছেলে গেছে ঘর ছেড়ে সেই অসময়ে সাবিত্রীও গেলো দেশ ছেড়ে কলকাতা যোদ্ধাহত মন আমার কাঁদে, সজল চোখের পাতা মাকে পেয়ে আমি হারিয়ে তোমায়, সেই ঠিকানায় আছি তোমাদের সেই বাড়িটাও আছে দৃষ্টির কাছাকাছি সেই জানালাতে আজও খুজে ফিরি, হারানো সে প্রতিমাকে তুমি কি এখনো কলকাতা আছো, নাকি অন্য বাঁকে? কেমন হয়েছে সংসার তোমার, কেমন হয়েছো তুমি? তোমার প্রেমের দাম দিয়ে কেনা আমার স্বদেশ ভূমি আর যদি কোনো পূজা-পার্বণে আসো তুমি এই দেশে হারানো প্রেমের অর্ঘ্য নিও একবার কাছে এসে তোমার অভাবে অস্থির আমি রয়ে গেছি আজও একা এই শেষ কথা জানাবো তোমায় আর যদি হয় দেখা
0 Comments